বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর কলেজ কমিটিকে ‘ফাঁসাতে’

  •    
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৮:০৩

জেলা পুলিশ সুপার জানান, কয়া মহাবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে বর্তমান কমিটির নেতাদের ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে ভাঙচুরকারীরা।

স্থানীয় একটি কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ফাঁসাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে হাতুড়ি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয় ভাস্কর্যটি।

এতে জড়িত থাকার সন্দেহে শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয় কুমারখালীর কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান, স্থানীয় সবুজ হোসেন, হৃদয় আহমেদকে।

গ্রেপ্তার তিন জন বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরে সরাসরি জড়িত দাবি করে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘জড়িত আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’

ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদের মামলায় শনিবার আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তার তিন জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর মামলায় গ্রেফতার তিন আসামি। ছবি: নিউজবাংলা

জেলা পুলিশ সুপার জানান, কয়া মহাবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে বর্তমান কমিটির নেতাদের ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে ভাঙচুরকারীরা।

কয়া কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির বর্তমান সভাপতি কেন্দ্রীয় তাঁতী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজাম উল হক চুন্নু। টানা তিন মেয়াদে এই পদে দায়িত্বপালন করছেন তিনি।

চুন্নুকে হটিয়ে কলেজের কর্তৃত্ব নিতে চান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান।

কলেজের মাঠে খেলা নিয়েও আনিসুরের সঙ্গে বর্তমান কমিটির অনুগত কলেজ অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদের সঙ্গে প্রায়ই গোলযোগ হতো।

ভাস্কর্য ভাঙার পর সাংবাদিকরা সেখানে গেলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলে আনিসুরের লোকজন। তাদের দাবি, কলেজ অধ্যক্ষ জামায়াতের লোক। তিনি মাঠে খেলা বন্ধ করে ধান চাষ করতে দিয়েছেন।

উল্টো দাবি আনিসুরের ঘনিষ্ঠ কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম স্বপনের। তিনি বলছেন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই কলেজ প্রিন্সিপাল ও সভাপতি নিজামুল হক চুন্নু ভাস্কর্য ভাঙার দায় অন্যদের ওপর চাপাচ্ছেন।

তবে ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের ব্যাপারে চাক্ষুষ প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত। বলেছেন, ‘কলেজের নাইট গার্ড খলিলুর রহমান পুলিশকে সব জানিয়েছেন।

‘ভাঙচুরকারীরা বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে কলেজ মাঠে অবস্থান করছিল। তারা আড্ডার ছলে সেখানে অবস্থান নেয়। পৌনে একটার দিকে তারা হাতুড়ি দিয়ে ভস্কর্যের তিন জায়গায় তিনটি আঘাত করে। এরপর মোটরসাইকেলে করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।’

কয়া মহাবিদ্যালয় চত্বরে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়।

ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীর জন্ম ১৮৭৯ সালে কয়া গ্রামের মামার বাড়িতে। তার পৈত্রিক নিবাস ঝিনাইদহে। তার আসল নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।

১৯১৫ সালে ৩৬ বছর বয়সে ভারতের বালেশ্বর বুড়িবালামের তীরে ব্রিটিশদের সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধে তিনি শহিদ হন।

১৫ দিনের মধ্যে কুষ্টিয়ায় দুটি ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল। ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়ে ভাঙচুর করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে।

পরে সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে এ ঘটনায় কওমি মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আদালতে চার জনই ভাস্কর্য ভাঙচুরের দায় স্বীকার করে জানান, হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা ফয়জুল করীমের বয়ান শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করেছে তারা।

এ বিভাগের আরো খবর